পেটের গ্যাস বের করার ব্যায়াম | ৭ দিনে ফলাফল

ব্যায়াম পেটের গ্যাস বের করার একটি প্রাকৃতিক এবং সহজ উপায়। নিয়মিত ব্যায়াম পরিপাক তন্ত্রকে সক্রিয় করতে এবং গ্যাস বের করে দিতে সাহায্য করে। চলুন জেনে নি সেই গুরুত্বপূর্ণ ব্যায়াম গুলি যা আমাদের জন্য অনেক উপকারে দিবে।

কিছু কার্যকর ব্যায়াম :

১. হাঁটা:

  • হাঁটা সবচেয়ে সহজ এবং কার্যকর ব্যায়ামগুলির মধ্যে একটি।
  • প্রতিদিন 30 মিনিট হাঁটা পেটের গ্যাস কমাতে সাহায্য করতে পারে।

২. যোগব্যায়াম:

  • কিছু যোগব্যায়াম পোজ, যেমন বজ্রাসন (Thunderbolt Pose), বালাসনা (Child’s Pose), সুপ্ত মার্জারী পোজ (Cat-Cow Pose) পেটের পেশীগুলিকে প্রসারিত করতে এবং গ্যাস বের করতে সাহায্য করে।

৩. সাইকেলিং:

  • সাইকেলিং একটি মজাদার এবং কার্যকর ব্যায়াম যা পেটের পেশীগুলিকে শক্তিশালী করে এবং গ্যাস বের করতে সাহায্য করে।

৪. সাঁতার কাটা:

  • সাঁতার কাটা একটি সম্পূর্ণ শরীরের ব্যায়াম যা পেটের পেশীগুলিকেও কাজ করে এবং গ্যাস বের করতে সাহায্য করে।

৫. (হাঁটু থেকে বুকের ভঙ্গি):

  • পিঠে শুয়ে দুই পা মুড়িয়ে বুকে টানুন।
  • 5 সেকেন্ড ধরে রাখুন এবং ছেড়ে দিন।
  • 10-15 বার পুনরাবৃত্তি করুন।

৬. বাতাসে পা ফেলা (Leg Raises):

  • পিঠে শুয়ে দুই পা সোজা করে উপরে তুলুন।
  • 5 সেকেন্ড ধরে রাখুন এবং আস্তে আস্তে নিচে নামিয়ে আনুন।
  • 10-15 বার পুনরাবৃত্তি করুন।

মনে রাখবেন:

  • ব্যায়াম শুরু করার আগে আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।
  • ব্যথা অনুভব করলে ব্যায়াম বন্ধ করুন।
  • ব্যায়ামের পূর্বে ও পরে হালকা গরম ও ঠান্ডা স্ট্রেচিং করুন।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন।

পেটের গ্যাস একটি সাধারণ সমস্যা যা বিভিন্ন কারণে হতে পারে। খাদ্য, জীবনধারা এবং কিছু ওষুধ গ্যাসের কারণ হতে পারে। গ্যাস কমাতে আপনার খাদ্য পরিবর্তন করাও গুরুত্বপূর্ণ। গ্যাস তৈরি করে এমন খাবার যেমন ডাল, বাঁধাকপি, ব্রকলি এড়িয়ে চলুন। প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন এবং নিয়মিত খাবার খান।

এই টিপসগুলি আপনাকে পেটের গ্যাস কমাতে এবং আপনার সামগ্রিক স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করবে।

আরও পড়ুনঃ লম্বা হওয়ার উপায় ও ব্যায়াম
কি কি খাবার খেলে পেটে গ্যাস হয়
পেটের গ্যাস বের করার ব্যায়াম

কি কি খাবার খেলে পেটে গ্যাস হয়?

কিছু খাবার যা পেটে গ্যাসের কারণ হতে পারে:

১. ডাল: ডালে ফাইবার অনেক বেশি থাকে, যা হজম হতে সময় নেয় এবং পেটে গ্যাস তৈরি করতে পারে।

২. বাঁধাকপি, ব্রকলি, ফুলকপি: এই সবজিগুলিতে রাফিনোজ নামক এক ধরণের কার্বোহাইড্রেট থাকে যা হজমের জন্য কঠিন হতে পারে এবং পেটে গ্যাস তৈরি করতে পারে।

৩. মসুর ডাল: মসুর ডালেও ফাইবার অনেক বেশি থাকে এবং পেটে গ্যাসের কারণ হতে পারে।

৪. লাল মাংস: লাল মাংস হজম করতে সময় নেয় এবং পেটে গ্যাস তৈরি করতে পারে।

৫. চর্বিযুক্ত খাবার: চর্বিযুক্ত খাবার হজম করতে সময় নেয় এবং পেটে গ্যাস তৈরি করতে পারে।

৬. প্রক্রিয়াজাত খাবার: প্রক্রিয়াজাত খাবারে উচ্চ ফ্রাক্টোজ কর্ন সিরাপ থাকে, যা পেটে গ্যাস তৈরি করতে পারে।

৭. কৃত্রিম মিষ্টি: কৃত্রিম মিষ্টি, যেমন অ্যাসপার্টেম এবং সুক্রালোজ পেটে গ্যাস তৈরি করতে পারে।

৮. কার্বনেটেড পানীয়: কার্বনেটেড পানীয়গুলিতে কার্বন ডাই অক্সাইড থাকে, যা পেটে গ্যাস তৈরি করতে পারে।

৯. অ্যালকোহল: অ্যালকোহল পেটে গ্যাস তৈরি করতে পারে।

১০. ধূমপান: ধূমপান পেটে গ্যাস তৈরি করতে পারে।

মনে রাখবেন:

  • প্রত্যেকের শরীর আলাদা এবং বিভিন্ন খাবারের প্রতি ভিন্নভাবে প্রতিক্রিয়া জানায়।
  • আপনার পেটে গ্যাসের কারণ কী তা নির্ধারণ করার জন্য একটি খাদ্য ডায়েরি রাখা সহায়ক হতে পারে।
  • আপনার যদি পেটে গ্যাসের সমস্যা হয় তবে আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।

পেটের গ্যাস একটি সাধারণ সমস্যা যা বিভিন্ন কারণে হতে পারে। খাদ্য, জীবনধারা এবং কিছু ওষুধ গ্যাসের কারণ হতে পারে।

গ্যাস কমাতে আপনার খাদ্য পরিবর্তন করাও গুরুত্বপূর্ণ। গ্যাস তৈরি করে এমন খাবার যেমন ডাল, বাঁধাকপি, ব্রকলি এড়িয়ে চলুন। প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন এবং নিয়মিত খাবার খান।

এই টিপসগুলি আপনাকে পেটের গ্যাস কমাতে সাহায্য করবে।

বাচ্চাদের পেটে গ্যাস হলে কি কি সমস্যা হয়?

পেট ফোলা: গ্যাস জমে থাকার ফলে বাচ্চাদের পেট ফুলে যেতে পারে।

পেটে ব্যথা: গ্যাসের চাপে পেট ব্যথা হতে পারে।

অস্বস্তি: গ্যাসের কারণে বাচ্চারা অস্বস্তি বোধ করতে পারে।

কান্না: পেটে ব্যথা ও অস্বস্তির কারণে বাচ্চারা বেশি কাঁদতে পারে।

ঘুমের সমস্যা: পেটে অস্বস্তি থাকলে বাচ্চাদের ঘুমাতে সমস্যা হতে পারে।

খাওয়ার অস্বীকার: পেটে ব্যথা ও অস্বস্তির কারণে বাচ্চারা খাওয়া বন্ধ করে দিতে পারে।

কোষ্ঠকাঠিন্য: গ্যাসের কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে।

অন্যান্য সমস্যা: কিছু ক্ষেত্রে, গ্যাসের কারণে আরও গুরুতর সমস্যা হতে পারে, যেমন অ্যালার্জি বা ল্যাক্টোজ অসহিষ্ণুতা

গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ:

  • যদি আপনার বাচ্চার পেটে ব্যথা খুব তীব্র হয়
  • যদি আপনার বাচ্চা রক্ত বমি করে বা মলত্যাগ করে
  • যদি আপনার বাচ্চার জ্বর থাকে
  • যদি আপনার বাচ্চা খাওয়া বন্ধ করে দেয় বা ওজন কমতে থাকে
  • যদি আপনার বাচ্চা অস্বাভাবিকভাবে ক্লান্ত বোধ করে

এই লক্ষণগুলি দেখা দিলে দ্রুত একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।

কিছু টিপস:

  • শিশুকে সঠিকভাবে দুধ খাওয়ান: দুধ খাওয়ানোর সময়, নিশ্চিত করুন যে শিশুর মুখ পুরোপুরি নিপল ঢেকে রয়েছে এবং বাতাস গিলে না যায়।
  • ঢেকুর তোলান: দুধ খাওয়ানোর পর এবং খাওয়ার পর শিশুকে ঢেকুর তোলান।
  • পেট ম্যাসাজ করুন: শিশুর পেটে আলতো করে ম্যাসাজ করলে গ্যাস বের হতে সাহায্য করতে পারে।
  • গরম পানি দিয়ে গোসল করান: গরম পানি দিয়ে গোসল করানো শিশুর পেটের ব্যথা ও অস্বস্তি কমাতে সাহায্য করতে পারে।
  • শিশুর খাবার নিয়ন্ত্রণ করুন: কিছু খাবার, যেমন **বাদাম, বিচি, ডাল, শাকসবজি ইত্যাদি, শিশুদের পেটে গ্যাসের কারণ হতে পারে।
  • প্রয়োজনে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন: যদি আপনার বাচ্চার পেটে গ্যাসের সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হয় বা তীব্র হয়, তাহলে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।

মনে রাখবেন: প্রতিটি শিশু আলাদা এবং তাদের পেটে গ্যাসের প্রতি সংবেদনশীলতাও আলাদা হতে পারে।

গ্যাস্ট্রিক হলে কি কি খাবার খাওয়া যাবে না
পেটের গ্যাস বের করার ব্যায়াম

গ্যাস্ট্রিক হলে কি কি খাবার খাওয়া যাবে না?

১. ঝাল খাবার: মরিচ, কাঁচা মরিচ, রসুন, পেঁয়াজ, আদা ইত্যাদি ঝাল খাবার পেটে অ্যাসিডের পরিমাণ বাড়িয়ে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।

২. ভাজা খাবার: ভাজা খাবার হজম করা কঠিন এবং পেটে অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে।

৩. তেলযুক্ত খাবার: তেলযুক্ত খাবার হজমে সময় লাগে এবং পেটে অ্যাসিডিটি বাড়িয়ে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।

৪. মশলাদার খাবার: এলাচ, লবঙ্গ, জিরা, ধনে, দারচিনি ইত্যাদি মশলাদার খাবার পেটে জ্বালাপোড়া ও অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে।

৫. ক্যাফেইনযুক্ত পানীয়: চা, কফি, কোলা ইত্যাদি ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় পেটে অ্যাসিডিটি বাড়িয়ে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।

৬. অ্যালকোহলযুক্ত পানীয়: মদ, ওয়াইন, বিয়ার ইত্যাদি অ্যালকোহলযুক্ত পানীয় পেটের আস্তরণে জ্বালাপোড়া সৃষ্টি করে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।

৭. ঠান্ডা পানীয়: ঠান্ডা পানীয় পেটে ঠান্ডা লাগিয়ে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।

৮. চর্বিযুক্ত খাবার: মাংস, মাছ, ডিম, দুধ, পনির ইত্যাদি চর্বিযুক্ত খাবার হজমে সময় লাগে এবং পেটে অ্যাসিডিটি বাড়িয়ে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।

৯. ফাস্ট ফুড: ফাস্ট ফুডে প্রচুর পরিমাণে তেল, মশলা এবং অস্বাস্থ্যকর উপাদান থাকে যা পেটে অস্বস্তি ও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

১০. প্রক্রিয়াজাত খাবার: প্রক্রিয়াজাত খাবারে প্রচুর পরিমাণে লবণ, চিনি এবং অস্বাস্থ্যকর উপাদান থাকে যা পেটে অস্বস্তি ও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

মনে রাখবেন:

  • গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা ছাড়াও, আপনার যদি অন্য কোনও স্বাস্থ্য সমস্যা থাকে তবে আপনার খাদ্যতালিকা সম্পর্কে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা গুরুত্বপূর্ণ।

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে দ্রুত মুক্তি পেতে এবং সুস্থ থাকতে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, নিয়মিত ব্যায়াম করা এবং পর্যাপ্ত ঘুম অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

আরও পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় প্রথম মাসে তলপেটে ব্যথা হয় কেন

চিরতরে গ্যাস দূর করার উপায়

সত্যি বলতে  চিরতরে গ্যাস দূর করার কোন নিশ্চিত উপায় নেই তবে কিছু টিপস ফলো করলে আপনার গ্যাস অনেকটাই নিয়ন্ত্রনে থাকবে বলে আশা করি।

গ্যাস হওয়ার কারণ:

  • গ্যাস হওয়ার অনেকগুলো কারণ আছে, যেমন খাদ্য, জীবনধারা, ঔষধ, হজমের সমস্যা, এমনকি মানসিক চাপ।
  • আপনার গ্যাসের কারণ নির্ধারণ করার উপর নির্ভর করে, চিকিৎসা বা জীবনধারার পরিবর্তন আপনার সমস্যা সমাধানে সাহায্য করতে পারে।

তবে, কিছু টিপস আপনাকে গ্যাসের সমস্যা কমাতে এবং আপনার সামগ্রিক স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে:

১. খাদ্য পরিবর্তন:

  • গ্যাস তৈরি করে এমন খাবার এড়িয়ে চলুন, যেমন ডাল, বাঁধাকপি, ব্রকলি, লাল মাংস, চর্বিযুক্ত খাবার, প্রক্রিয়াজাত খাবার, কৃত্রিম মিষ্টি, কার্বনেটেড পানীয়, অ্যালকোহল ইত্যাদি।
  • প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন।
  • নিয়মিত খাবার খান।
  • আস্তা খাবার, ফল, শাকসবজি বেশি খান।
  • প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার খান, যেমন দই, লাচ্ছি, টক দই ইত্যাদি।

২. জীবনধারার পরিবর্তন:

  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
  • ধূমপান ত্যাগ করুন
  • পর্যাপ্ত ঘুম নিন।
  • মানসিক চাপ কমাতে যোগব্যায়াম, ধ্যান ইত্যাদি অনুশীলন করুন।
  • ধীরে ধীরে খাবার খান এবং ভালোভাবে চিবিয়ে খান।
  • খাওয়ার পরপরই শুয়ে পড়বেন না

৩. ঔষধ:

  • কিছু ক্ষেত্রে, ডাক্তার অ্যাসিড রিডাকশন ঔষধ, অ্যান্টি-স্প্যাজমোডিক ঔষধ, প্রোবায়োটিক ইত্যাদি ঔষধ দিতে পারেন।

মনে রাখবেন:

  • আপনার গ্যাসের সমস্যা যদি তীব্র হয় বা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা গুরুত্বপূর্ণ।
  • এই টিপসগুলি আপনাকে গ্যাসের সমস্যা কমাতে এবং আপনার সামগ্রিক স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করবে।

এছাড়াও, মনে রাখবেন যে প্রত্যেকের শরীর আলাদা এবং বিভিন্ন খাবারের প্রতি ভিন্নভাবে প্রতিক্রিয়া জানায়। আপনার জন্য কোন টিপসটি সবচেয়ে ভালো কাজ করে তা বের করার জন্য আপনাকে বিভিন্ন টিপস চেষ্টা করে দেখতে হতে পারে।

Share your love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *