লম্বা হওয়ার উপায় ও ব্যায়াম, মানুষ কতটা লম্বা হবে তা নির্ধারণ করে মূলত দুটি বিষয়ের উপর চলুন জেনে নি সেই উপায় গুলি কি কি। আশা করি আজকের এই পোস্ট টি আপনের অনেক কাজে লাগবে।
- জিনগত: উচ্চতার ৬০-৮০% জিনগত কারণের উপর নির্ভর করে।
- পরিবেশগত: উচ্চতার ২০-৪০% পরিবেশগত কারণের উপর নির্ভর করে, যেমন: পুষ্টি, ঘুম, হরমোন, এবং শারীরিক কার্যকলাপ।
যদিও জিনগত বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন করা সম্ভব নয়, তবে কিছু উপায় আছে যা আপনি আপনার পূর্ণ সম্ভাব্য উচ্চতা অর্জনে সহায়তা করতে পারেন:
১. সুষম খাদ্য গ্রহণ:
- প্রোটিন: পেশী বৃদ্ধি এবং টিস্যু মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয়।
- ক্যালসিয়াম: হাড়ের বৃদ্ধি ও শক্তির জন্য প্রয়োজনীয়।
- ভিটামিন ডি: ক্যালসিয়াম শোষণে সহায়তা করে।
- জিন্স: কোষের বৃদ্ধি ও মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয়।
- ফল ও শাকসবজি: অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অন্যান্য পুষ্টিকর উপাদান সমৃদ্ধ।
২. পর্যাপ্ত ঘুম:
- বৃদ্ধির হরমোন GH ঘুমের সময় নিঃসৃত হয়।
- প্রতিদিন ৮-১০ ঘন্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন।
৩. নিয়মিত ব্যায়াম:
- নিয়মিত ব্যায়াম হাড় ও পেশী শক্তিশালী করতে সাহায্য করে এবং মেরুদণ্ডকে প্রসারিত করতে পারে।
- বিশেষ করে সাঁতার, টেনিস, বাস্কেটবল, এবং ভলিবলের মতো লম্বা লাফানো ও প্রসারিত করার প্রয়োজন এমন খেলাধুলা উপকারী।
৪. সঠিক ভঙ্গি:
- সোজা দাঁড়ান ও বসুন যাতে আপনার মেরুদণ্ড সারিবদ্ধ থাকে।
- খারাপ ভঙ্গি মেরুদণ্ডকে সংকুচিত করতে পারে এবং আপনাকে ছোট দেখাতে পারে।
৫. মানসিক চাপ কমান:
- মানসিক চাপ করtisol নামক হরমোনের নিঃসরণ বৃদ্ধি করতে পারে, যা বৃদ্ধিতে বাধা দিতে পারে।
- যোগব্যায়াম, ধ্যান, বা গভীর শ্বাস মতো কৌশলগুলি ব্যবহার করে মানসিক চাপ কমাতে চেষ্টা করুন।
মনে রাখবেন:
- প্রত্যেকেই বিভিন্ন হারে বৃদ্ধি পায়।
- কোনো নির্দিষ্ট উচ্চতা অর্জনের গ্যারান্টি নেই।
- সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো সুস্থ থাকা এবং আপনার পূর্ণ সম্ভাব্যতা অর্জনের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া।
আরও পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় প্রথম মাসে তলপেটে ব্যথা হয় কেন
লম্বা হতে সহায়তা করতে পারে এমন কিছু ব্যায়াম:
- ঝুলন্ত ব্যায়াম:
- একটি হাই পুল-আপ বার বা মঙ্কি বারে ঝুলুন।
- 30 সেকেন্ড ধরে ঝুলুন, তারপর বিশ্রাম নিন এবং আবার করুন।
- ধীরে ধীরে ঝুলন্ত সময় বাড়ান।
- পুল-আপ:
- একটি পুল-আপ বার ধরুন এবং আপনার শরীরকে উপরে টানুন যতক্ষণ না আপনার চিবুক বারের উপরে না আসে।
- ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণে নিচে নামুন।
- যতটা সম্ভব পুনরাবৃত্তি করুন।
- বার্পিস:
- স্কোয়াট পজিশনে শুরু করুন।
- দ্রুত আপনার পা পেছনে ঠেলে দিয়ে জাম্পিং পজিশনে যান।
- আপনার হাত মাথার উপরে উঠিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়ান।
- স্কোয়াট পজিশনে ফিরে আসুন।
- যতটা সম্ভব পুনরাবৃত্তি করুন।
- স্ট্রেচিং:
- আপনার পিঠ, হাঁটু এবং হ্যামস্ট্রিং নিয়মিতভাবে প্রসারিত করুন।
- প্রতিটি স্ট্রেচ 30 সেকেন্ড ধরে রাখুন।
- যোগব্যায়াম:
- কিছু যোগব্যায়াম, যেমন কোব্রা পোজ এবং ডাউনওয়ার্ড-ফেসিং ডগ পোজ, আপনার মেরুদণ্ডকে প্রসারিত করতে এবং আপনার উচ্চতা বাড়াতে সহায়তা করতে পারে।
18 বছরের পর লম্বা হওয়া যায় কি?
সাধারণত, 18 বছর বয়সের পর মানুষের লম্বা হওয়া বন্ধ হয়ে যায়। কারণ, এই সময়ের পরে এপিফাইসিয়াল প্লেট বন্ধ হয়ে যায়। এপিফাইসিয়াল প্লেট হল দীর্ঘ হাড়ের দুই প্রান্তে অবস্থিত একটি কার্টিলেজ প্লেট যা নতুন হাড়ের কোষ তৈরি করে। যখন এপিফাইসিয়াল প্লেট বন্ধ হয়ে যায়, তখন নতুন হাড়ের কোষ তৈরি বন্ধ হয়ে যায় এবং লম্বা হওয়াও বন্ধ হয়ে যায়।
তবে, কিছু ব্যতিক্রম আছে। কিছু ক্ষেত্রে, 18 বছরের পরও লম্বা হওয়া সম্ভব। এর কারণগুলির মধ্যে রয়েছে:
- জিনগত বৈচিত্র্য: কিছু লোকের জিন থাকে যা তাদেরকে 18 বছরের পরও লম্বা হতে দেয়।
- হরমোনের সমস্যা: কিছু হরমোনের সমস্যা, যেমন গ্রোথ হরমোনের অভাব, 18 বছরের পরও লম্বা হতে পারে।
- মেরুদণ্ডের সমস্যা: কিছু মেরুদণ্ডের সমস্যা, যেমন স্কোলিয়োসিস, 18 বছরের পরও লম্বা হতে বাধা দিতে পারে।
আপনি যদি 18 বছরের পর লম্বা হওয়ার বিষয়ে উদ্বিগ্ন হন তবে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত। তারা আপনার উচ্চতা কেন বৃদ্ধি পাচ্ছে না তা নির্ণয় করতে এবং চিকিৎসার বিকল্পগুলি নিয়ে আলোচনা করতে সাহায্য করতে পারে।
মনে রাখবেন:
- লম্বা হওয়ার জন্য কোন নিশ্চিত উপায় নেই।
- এই তথ্য শুধুমাত্র তথ্যমূলক উদ্দেশ্যে এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত পরামর্শ হিসাবে বিবেচিত হওয়া উচিত নয়।
- আপনার উচ্চতা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার পরিবর্তে, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করার উপর ফোকাস করুন এবং আপনার সম্ভাব্য সর্বোচ্চ উচ্চতা অর্জন করুন।
মেয়েরা কত বছর বয়স পর্যন্ত লম্বা হতে পারে?
মেয়েরা সাধারণত 16 থেকে 18 বছর বয়স পর্যন্ত লম্বা হতে পারে।তবে, কিছু মেয়ে 19-20 বছর বয়স পর্যন্তও লম্বা হতে পারে। এই বৈচিত্র্যের কারণগুলির মধ্যে রয়েছে:
- জিনগত বৈচিত্র্য: কিছু মেয়ের জিন থাকে যা তাদেরকে অন্যদের তুলনায় দীর্ঘ সময় ধরে লম্বা হতে দেয়।
- পুষ্টি: শৈশব এবং কিশোরকালে পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টিকর খাবার খাওয়া মেয়েদের তাদের সম্ভাব্য উচ্চতা অর্জনে সহায়তা করে।
- হরমোন: গ্রোথ হরমোন সহ বিভিন্ন হরমোন মেয়েদের লম্বা হতে সাহায্য করে।
- সামগ্রিক স্বাস্থ্য: সামগ্রিকভাবে ভালো স্বাস্থ্য থাকা মেয়েদের তাদের সম্ভাব্য উচ্চতা অর্জনে সহায়তা করে।
কিছু বিষয় মেয়েদের লম্বা হওয়ার সম্ভাবনা কমিয়ে দিতে পারে:
- পুষ্টির অভাব: শৈশব এবং কিশোরকালে পুষ্টির অভাব মেয়েদের লম্বা হওয়ার সম্ভাবনা কমিয়ে দিতে পারে।
- কিছু চিকিৎসা অবস্থা: কিছু চিকিৎসা অবস্থা, যেমন ক্রোন’স রোগ , মেয়েদের লম্বা হওয়ার সম্ভাবনা কমিয়ে দিতে পারে।
- কিছু ওষুধ: কিছু ওষুধ, যেমন স্টেরয়েড, মেয়েদের লম্বা হওয়ার সম্ভাবনা কমিয়ে দিতে পারে।
আপনি যদি আপনার মেয়ের উচ্চতা নিয়ে উদ্বিগ্ন হন তবে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত। তারা আপনার মেয়ের উচ্চতা কেন বৃদ্ধি পাচ্ছে না তা নির্ণয় করতে এবং চিকিৎসার বিকল্পগুলি নিয়ে আলোচনা করতে সাহায্য করতে পারে।
মনে রাখবেন:
- লম্বা হওয়ার জন্য কোন নিশ্চিত উপায় নেই।
- এই তথ্য শুধুমাত্র তথ্যমূলক উদ্দেশ্যে এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত পরামর্শ হিসাবে বিবেচিত হওয়া উচিত নয়।
- আপনার মেয়ের উচ্চতা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার পরিবর্তে, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করার উপর ফোকাস করুন এবং তাকে তার সম্ভাব্য সর্বোচ্চ উচ্চতা অর্জনে সহায়তা করুন।
আরও পড়ুনঃ সূর্য থেকে চাঁদের দূরত্ব কত কিলোমিটার
২ থেকে ৩ ইঞ্চি লম্বা হওয়ার উপায়:
দুঃখিত, ২ থেকে ৩ ইঞ্চি লম্বা হওয়ার কোন নিশ্চিত উপায় নেই। কারণ:
- মানুষ কতটা লম্বা হবে তা নির্ধারণ করে তিনটি প্রধান বিষয়:
- জিনগত: আপনার পিতামাতার উচ্চতা আপনার উচ্চতার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্ধারক।
- পুষ্টি: শৈশব এবং কিশোরকালে পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টিকর খাবার খাওয়া আপনার সম্ভাব্য উচ্চতা অর্জনে সহায়তা করে।
- ব্যায়াম: নিয়মিত ব্যায়াম, বিশেষ করে কিশোরকালে, আপনার মেরুদণ্ডকে প্রসারিত করতে এবং আপনার সম্ভাব্য উচ্চতা অর্জনে সহায়তা করতে পারে।
- ১৮ বছর বয়সের পর মানুষের লম্বা হওয়া সাধারণত বন্ধ হয়ে যায়। কারণ, এই সময়ের পরে এপিফাইসিয়াল প্লেট বন্ধ হয়ে যায়।
- কিছু ব্যতিক্রম আছে, যেমন জিনগত বৈচিত্র্য, হরমোনের সমস্যা, মেরুদণ্ডের সমস্যা।
আরও পড়ুনঃ মানবদেহের সবচেয়ে শক্তিশালী পেশী কোনটি
তবে, কিছু টিপস আপনাকে আপনার সম্ভাব্য সর্বোচ্চ উচ্চতা অর্জনে সহায়তা করতে পারে:
১. স্বাস্থ্যকর খাবার খান:
- পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খান।
- ফল, শাকসবজি এবং গোটা শস্য খান।
- প্রক্রিয়াজাত খাবার, চিনিযুক্ত পানীয় এবং অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।
২. নিয়মিত ব্যায়াম করুন:
- সপ্তাহে অন্তত 3 দিন 30 মিনিট ব্যায়াম করুন।
- হাঁটা, দৌড়ানো, সাঁতার কাটা, সাইকেল চালানো এবং শক্তি প্রশিক্ষণের মতো এ্যারোবিক এবং ওজন-ভিত্তিক ব্যায়াম অন্তর্ভুক্ত করুন।
- যোগব্যায়াম এর মতো প্রসারণ ব্যায়ামও করুন।
৩. পর্যাপ্ত ঘুম পান:
- প্রতি রাতে 7-8 ঘন্টা ঘুমান।
- ঘুমানোর সময় একটি নিয়মিত সময়সূচী বজায় রাখুন।
- একটি আরামদায়ক ঘুমানোর পরিবেশ তৈরি করুন।
৪. ভালো মেজাজ রাখুন:
- মানসিক চাপ কমান এবং উদ্বেগ নিয়ন্ত্রণ করুন।
- ইতিবাচক চিন্তাভাবনা অনুশীলন করুন।
- প্রয়োজনে একজন মনোবিদের সাথে কথা বলুন।
৫. ধূমপান এবং অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন:
- ধূমপান এবং অ্যালকোহল আপনার বৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।
মনে রাখবেন:
- এই টিপসগুলি কেবলমাত্র আপনার সম্ভাব্য উচ্চতা অর্জনে সহায়তা করতে পারে।