কম্পিউটার ভাইরাস কি | What is a Computer Virus?

What is a computer virus?

কম্পিউটার ভাইরাস কি ? কম্পিউটার ভাইরাস হলো ক্ষতিকর প্রোগ্রাম যা কম্পিউটারে প্রবেশ করে এবং ক্ষতি করে। এটি অন্যান্য ফাইল ও প্রোগ্রামে ছড়িয়ে পড়তে সক্ষম। ভাইরাস ডেটা নষ্ট করতে পারে, কম্পিউটারের কার্যকারিতা ব্যাহত করতে পারে এবং এমনকি গোটা নেটওয়ার্ককে আক্রমন করতে পারে

কম্পিউটার ভাইরাসের কিছু সাধারণ উদাহরণ:

  • বুট ভাইরাস: কম্পিউটার বুট হওয়ার সময় সক্রিয় হয়।
  • ফাইল ভাইরাস: ফাইল সংযুক্তি, ডাউনলোড করা ফাইল, বা USB ড্রাইভের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
  • ম্যাক্রো ভাইরাস: Microsoft Word বা Excel এর মতো অ্যাপ্লিকেশনের ম্যাক্রোতে লুকিয়ে থাকে।
  • পলিমর্ফিক ভাইরাস: নিজেকে বারবার পরিবর্তন করে অ্যান্টিভাইরাস সফ্টওয়্যার এড়িয়ে চলে।
  • ওয়ার্ম: নেটওয়ার্কের মাধ্যমে নিজেকে ছড়িয়ে পড়ে এবং কম্পিউটারের সম্পদ ব্যবহার করে।

কম্পিউটার ভাইরাসের লক্ষণ:

  • কম্পিউটার ধীর গতিতে চলে বা অনিয়ন্ত্রিতভাবে কাজ করে
  • ফাইল নষ্ট হয় বা অদৃশ্য হয়ে যায়
  • অ্যান্টিভাইরাস সফ্টওয়্যার কাজ করে না
  • অদ্ভুত বার্তা বা পপ-আপ উইন্ডো প্রদর্শিত হয়
  • অপ্রয়োজনীয় ফাইল বা ফোল্ডার তৈরি হয়

কম্পিউটার ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে কিছু টিপস:

  • একটি বিশ্বস্ত অ্যান্টিভাইরাস সফ্টওয়্যার ইনস্টল করুন এবং নিয়মিত আপডেট করুন।
  • ফাইল ডাউনলোড করার আগে সতর্ক থাকুন এবং অপরিচিত উত্স থেকে ফাইল খুলবেন না।
  • ইমেইলের সংযুক্তি খোলার আগে স্ক্যান করুন
  • আপনার অপারেটিং সিস্টেম এবং সফ্টওয়্যারের জন্য নিয়মিত আপডেট ইনস্টল করুন
  • আপনার গুরুত্বপূর্ণ ডেটার ব্যাকআপ নিন

কম্পিউটার ভাইরাস একটি গুরুতর হুমকি হতে পারে, তবে সঠিক পদক্ষেপ নিয়ে আপনি নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে পারেন।

আপনার যদি মনে হয় যে আপনার কম্পিউটার ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে, তাহলে দ্রুত একজন বিশেষজ্ঞের সাথে যোগাযোগ করুন।

আরও পড়ুনঃ আধুনিক কম্পিউটারের জনক কে? চার্লস ব্যাবেজ

কম্পিউটার ভাইরাস কি
কম্পিউটার থেকে কম্পিউটারে তথ্য আদান প্রদানকে কি বলে

কম্পিউটার থেকে কম্পিউটারে তথ্য আদান প্রদানকে কি বলে?

  • ডেটা ট্রান্সফার (Data Transfer): এটি একটি সাধারণ শব্দ যা যেকোনো মাধ্যমে কম্পিউটারের মধ্যে তথ্য স্থানান্তরকে বোঝায়।
  • নেটওয়ার্কিং (Networking): এটি কম্পিউটার এবং ডিভাইসগুলির মধ্যে সংযোগ স্থাপন এবং তথ্য আদান-প্রদানের জন্য নিয়ম ও প্রযুক্তি ব্যবহারকে বোঝায়।
  • ফাইল শেয়ারিং (File Sharing): এটি কম্পিউটারের মধ্যে ফাইল পাঠানো এবং গ্রহণ করার প্রক্রিয়া।
  • ক্লাউড স্টোরেজ (Cloud Storage): এটি ইন্টারনেটের মাধ্যমে ডেটা সংরক্ষণ এবং অ্যাক্সেস করার একটি পরিষেবা।
  • রিমোট অ্যাক্সেস (Remote Access): এটি অন্য কোনো স্থান থেকে একটি কম্পিউটার নিয়ন্ত্রণ এবং ব্যবহার করার ক্ষমতা।

কোন শব্দটি ব্যবহার করা হবে তা নির্ভর করে তথ্য আদান-প্রদানের প্রসঙ্গ এবং পদ্ধতি এর উপর।

উদাহরণস্বরূপ:

  • যদি আপনি একটি USB ড্রাইভ ব্যবহার করে দুটি কম্পিউটারের মধ্যে ফাইল স্থানান্তর করেন, তাহলে আপনি “ডেটা ট্রান্সফার” বা “ফাইল শেয়ারিং” শব্দটি ব্যবহার করতে পারেন।
  • যদি আপনি ইন্টারনেটের মাধ্যমে একটি ওয়েবসাইট অ্যাক্সেস করেন, তাহলে আপনি “নেটওয়ার্কিং” শব্দটি ব্যবহার করবেন।
  • যদি আপনি Dropbox বা Google Drive এর মতো ক্লাউড স্টোরেজ পরিষেবা ব্যবহার করেন, তাহলে আপনি “ক্লাউড স্টোরেজ” শব্দটি ব্যবহার করবেন।
  • যদি আপনি TeamViewer বা AnyDesk এর মতো রিমোট অ্যাক্সেস সফ্টওয়্যার ব্যবহার করেন, তাহলে আপনি “রিমোট অ্যাক্সেস” শব্দটি ব্যবহার করবেন।

আরও পড়ুনঃ সাইবার অপরাধ প্রতিরোধের উপায়

কমন কিছু কম্পিউটার ভাইরাস এবং তাদের অপকারিতা

1. ট্রোজান হর্স (Trojan Horse):

নামের উৎস: ট্রোজান যুদ্ধের গ্রিক কাঠের ঘোড়া থেকে।

উদাহরণ: Zeus, SpyEye

অপকারিতা:

কম্পিউটারে ব্যাকডোর তৈরি করে, যা হ্যাকারদের দূর থেকে অ্যাক্সেস দেয়।

ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করতে পারে।

অন্যান্য ম্যালওয়্যার ইনস্টল করতে পারে।

2. র‍্যানসমওয়্যার (Ransomware):

উদাহরণ: WannaCry, Petya

অপকারিতা:

কম্পিউটারের ফাইল এনক্রিপ্ট করে এবং ব্যবহারকারীদের ডেটা অ্যাক্সেসের জন্য মুক্তিপণ দাবি করে।

ব্যবসা এবং সংস্থাগুলিকে ব্যাপক আর্থিক ক্ষতি করতে পারে।

গুরুত্বপূর্ণ ডেটা হারানোর ঝুঁকি তৈরি করে।

3. স্প্যাম (Spam):

উদাহরণ: অনাকাঙ্ক্ষিত ইমেইল, টেক্সট বার্তা, বা ফোন কল।

অপকারিতা:

কম্পিউটার এবং নেটওয়ার্ককে ধীর করে দেয়।

ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করতে পারে।

ফিশিং আক্রমণের মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের প্রতারিত করতে পারে।

4. ফিশিং (Phishing):

উদাহরণ: ভুয়া ওয়েবসাইট বা ইমেইল যা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা ক্রেডিট কার্ডের তথ্য চুরি করার চেষ্টা করে।

অপকারিতা:

ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করতে পারে।

আর্থিক ক্ষতি করতে পারে।

পরিচয় চুরির ঝুঁকি তৈরি করে।

র‍্যানসমওয়্যার (Ransomware) অ্যাটাক কি?

র‍্যানসমওয়্যার (Ransomware) হল এক ধরনের ম্যালওয়্যার (দূষিত সফ্টওয়্যার) যা কম্পিউটারের ফাইলগুলিকে এনক্রিপ্ট করে, ফলে ব্যবহারকারীরা তাদের ফাইলগুলো অ্যাক্সেস করতে পারে না। এরপরে, র‍্যানসমওয়্যারটি ফাইলগুলো আবার ডিক্রিপ্ট করার জন্য মুক্তিপণের দাবি করে, সাধারণত ক্রিপ্টোকারেন্সির মতো কোনো অর্থে।

র‍্যানসমওয়্যার আক্রমণ ব্যক্তিগত ব্যবহারকারীদের পাশাপাশি ব্যবসা এবং সংস্থান কেও লক্ষ্যবস্তু করতে পারে। এটি একটি গুরুতর হুমকি কারণ এটি ব্যবহারকারীদের গুরুত্বপূর্ণ ফাইল, যেমন ছবি, দस्ताবেজ, এবং আর্থিক তথ্য অ্যাক্সেস করতে বাধা দেয়।

র‍্যানসমওয়্যার কীভাবে কাজ করে?

  1. এনক্রিপ্টেশন: র‍্যানসমওয়্যার সাধারণত ফিশিং ইমেইল, দূষিত ওয়েবসাইট বা দূষিত ফাইল ডাউনলোডের মাধ্যমে কম্পিউটারে প্রবেশ করে। একবার ইনস্টল হয়ে গেলে, এটি কম্পিউটারের হার্ড ড্রাইভে ফাইলগুলো সন্ধান করে এবং সেগুলিকে এনক্রিপ্ট করে। এনক্রিপ্ট করা ফাইলগুলো আর ব্যবহার করা যায় না।
  2. মুক্তিপণের দাবি: এনক্রিপ্ট করার পর, র‍্যানসমওয়্যারটি একটি পॉप-আপ বার্তা প্রদর্শন করে যা ব্যবহারকারীকে জানায় যে তাদের ফাইলগুলি লক করা আছে এবং সেগুলিকে আনলক করতে মুক্তিপণ দিতে হবে। মুক্তিপণের পরিমাণ পরিবর্তিত হতে পারে, কিন্তু সাধারণত এটি ক্রিপ্টোকারেন্সিতে দেওয়া হয়, যা ট্র্যাক করা কঠিন।
  3. ধামকী: কিছু র‍্যানসমওয়্যার হুমকি দেয় যে যদি মুক্তিপণ দ্রুত भुगतान (bhugtan) (প দেওয়া) না করা হয়, তাহলে ফাইলগুলো মুছে ফেলা হবে অথবা আরও বেশি অর্থের দাবি করা হবে।

র‍্যানসমওয়্যারের প্রভাব:

  • ডেটা লস: ব্যবহারকারীরা তাদের গুরুত্বপূর্ণ ফাইল অ্যাক্সেস হারিয়ে ফেলতে পারে।
  • আর্থিক ক্ষতি: ব্যবসা এবং সংস্থাগুলো মুক্তিপণ দিতে বা ডেটা পুনরুদ্ধার করতে অর্থ ব্যয় করতে বাধ্য হতে পারে।
  • সময়ের অপচয়: র‍্যানসমওয়্যার আক্রমণের ফলে ফাইলগুলো পুনরুদ্ধার করতে বা সিস্টেম পুনঃস্থাপন করতে সময় հղণী (hono) (লাগতে পারে)।
  • সুনাম ক্ষতি: র‍্যানসমওয়্যার আক্রমণ একটি সংস্থার সুনামে ক্ষতি করতে পারে।

র‍্যানসমওয়্যার থেকে নিজেকে কিভাবে সুরক্ষিত করবেন? 

প্রতিরোধই সর্বোত্তম প্রতিকার। র‍্যানসমওয়্যার থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখার জন্য আপনি কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে পারেন:

1. আপডেটেড অ্যান্টিভাইরাস এবং অ্যান্টি-ম্যালওয়্যার সফ্টওয়্যার ব্যবহার করুন:

  • একটি বিশ্বস্ত অ্যান্টিভাইরাস এবং অ্যান্টি-ম্যালওয়্যার প্রোগ্রাম ইনস্টল করুন এবং নিয়মিত আপডেট রাখুন।
  • এটি র‍্যানসমওয়্যার সহ অন্যান্য ম্যালওয়্যার সনাক্ত এবং অপসারণ করতে সাহায্য করবে।

2. সতর্ক ইন্টারনেট ব্যবহার করুন:

  • অপরিচিত ওয়েবসাইটে না যান এবং সন্দেহজনক লিঙ্কে ক্লিক করবেন না।
  • অপরিচিত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান থেকে ইমেইলের সংযুক্তি খুলবেন না।
  • শুধুমাত্র নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে সফ্টওয়্যার ডাউনলোড করুন।

3. আপনার অপারেটিং সিস্টেম এবং সফ্টওয়্যার আপডেট রাখুন:

  • অপারেটিং সিস্টেম এবং সফ্টওয়্যারের জন্য নিয়মিত নিরাপত্তা আপডেট ইনস্টল করুন।
  • এটি নিরাপত্তা ফাঁকগুলি বন্ধ করতে সাহায্য করবে যা র‍্যানসমওয়্যার হ্যাকাররা অপব্যবহার করতে পারে।

4. ব্যাকআপ নিন:

  • আপনার গুরুত্বপূর্ণ ফাইলের নিয়মিত ব্যাকআপ নিন।
  • এটি আপনাকে র‍্যানসমওয়্যার আক্রমণের পরে আপনার ডেটা পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করবে।

5. সতর্ক থাকুন:

  • র‍্যানসমওয়্যার সম্পর্কে সচেতন থাকুন এবং এর লক্ষণগুলি চিনতে শিখুন।
  • যদি আপনি মনে করেন যে আপনার কম্পিউটার র‍্যানসমওয়্যারে আক্রান্ত হয়েছে, তাহলে দ্রুত একজন বিশেষজ্ঞের সাথে যোগাযোগ করুন।

অতিরিক্ত টিপস:

  • ক্লাউড স্টোরেজ ব্যবহার করুন:
  • আপনার গুরুত্বপূর্ণ ফাইলগুলি ক্লাউড স্টোরেজ পরিষেবায় সংরক্ষণ করুন।
  • এটি আপনাকে র‍্যানসমওয়্যার আক্রমণের পরে আপনার ডেটা পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করবে।
  • ফায়ারওয়াল ব্যবহার করুন:
  • আপনার কম্পিউটারকে অননুমোদিত অ্যাক্সেস থেকে রক্ষা করার জন্য একটি ফায়ারওয়াল ব্যবহার করুন।
  • শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন:
  • আপনার সমস্ত অ্যাকাউন্টের জন্য শক্তিশালী এবং অনন্য পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন।

উপসংহার

র‍্যানসমওয়্যার একটি ক্রমবর্ধমান হুমকি, তাই সুরক্ষিত থাকার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। পোস্ট টি ভাল লাগলে শেয়ার করতে ভুলবেন না।

Share your love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *